ব্যর্থতা (অণুগল্প)
শ্রীবরুণ, গুয়াহাটি, ২৭/০৭/২০২১
‘ব্যর্থতা’ শব্দটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
এর অর্থ নেতিবাচক বটে, কিন্তু হাড়ে হাড়ে চিনিয়ে দেয় যে জীবন কী জিনিস!
সেই ব্যর্থতা আমার জীবনে কতটুকু মানায় সেটা
মাপতে বসেছি আজ।
মানুষের গড় আয়ু যদি সত্তর হয় তবে আমি তার
অর্ধেক পথ হেঁটে ফেলেছি। সুতরাং সামান্য পরিমাণে হলেও তথাকথিত ‘জীবনাভিজ্ঞতা’ আমার
ঝুলিতে জমেছে। ইংরাজি বর্ণমালার তিনটি এইচ-এর প্রভাব মানুষের জীবনে নাকি সর্বাধিক।
হ্যান্ড, হেড ও হার্ট। হাত বেচারা নিজে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কখনো হৃদয়ের দাস,
আবার কখনো মগজের। ফলে কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হলে অথবা সিদ্ধান্ত নিতে হলে মূলত
এই হেড ও হার্টের মধ্যে লড়াই বাঁধে। মাথা যখন হৃদয়কে শাসন করে তখন হৃদয় বেচারার অবস্থা
হয় দেখার মতো। আর হৃদয় যখন মাথায় ভর করে তখন যুক্তি-তর্ক সমস্তকিছু ভুলে মস্তিষ্ক বেচারা
ভেজা বেড়ালের মতো লেজ গুটিয়ে বসে থাকে।
আমি-পদার্থটা আগাগোড়াই হৃদয়ের পোষ্যপুত্র।
মাথা মাঝেমধ্যে মাথা-চাড়া দিয়ে ওঠে বটে, তবে মাথা-খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায় না কখনো। অনেক
বিজ্ঞজনদের বলতে শুনেছি, যখন কারো সঙ্গে মন কষাকষি হয় তখন নাকি নিজেকেই দোষারোপ করতে
হয়। অর্থাৎ ব্যাপারটা এভাবে ভাবা উচিত যে, হয় আমি অন্যের কথা বুঝিনি, অথবা অন্যকে নিজের
কথাটুকু ঠিকঠাক বোঝাতে পারিনি। কিন্তু সবসময় কি এসব পণ্ডিতি খাটে? সেই অন্যকেউ, যাকে
তুমি বুকের মধ্যে গুঁজে রাখো সবসময়, সে যদি তোমাকে জড়িয়ে ধরে অন্যের দিকে চেয়ে থাকে?
তাহলে?
ধ্যাৎ!
কী যে সব ভাবছি। হার্টফেল করলে অথবা মাথা-খারাপ হলে বুঝি এমনটাই হয়!
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার বুদ্ধির গোঁড়ায় ধোঁয়া
দিয়ে কাকের-ঠ্যাং বগের-ঠ্যাং যা পারি লিখলাম। অভ্যেস নেই যে, তাই লেখাটা বিশ্রী মনে
হচ্ছে। কী লিখলাম, সেটা হয়তো কাল নিজেই বুঝব না। হয়তো ছিঁড়ে ফেলব। তবু লিখলাম। ইচ্ছে
হল। তাই।
আর হ্যাঁ, এটুকুও হয়তো লিখতে পারতাম না,
গলায় দড়ি দিতে গিয়ে যদি বাটামটা ভেঙে না পড়ত। ভেতরে ভেতরে যে এত ঘুণ ধরেছিল সেটা বুঝতেই
পারিনি।
এখন থাক, আর লিখব না। বেঁচে থাকলে আরও অনেক
লেখা যাবে।
প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে।
সকাল সকাল উঠতে হবে।
কত কাজ পড়ে রয়েছে!
সবার আগে, মিস্ত্রি ডেকে ওই সিলিংটা সারাতে
হবে। বাটামটাও পাল্টাতে হতে পারে।
No comments:
Post a Comment