আবদার
(বরুণ কুমার সাহা, 27 / 02/ 2018)
রাত
দুটো পঁয়তাল্লিশ । কলেজ বান্ধবী সুরঞ্জনার ফোন।
সুরঞ্জনা একটু থমথমে গলায়— হ্যালো! সুজয়! তোমার ফুসফুসটা একদিনের জন্য ধার দিতে পারো ?
সুজয় সিলিং থেকে চোখ নামিয়ে— রাতদুপুরে ফোন করে হঠাৎ এ কী আবদার, মিসেস সুরঞ্জনা? শ্রীমান বুঝি হাসপাতালে নাইট ডিউটিতে?
সুরঞ্জনা ফোনটা চেপে ধরে— হম্। নাইট ডিউটি। রোজই নাইট ডিউটি। এখন বলো, দেবে কি না ?
সুজয়— কী ?? কী চাই এবার? কী চাই ? ফুসফুস? কী হবে তাতে, শুনি!
সুরঞ্জনা— নিকোটিনগুলো গামছার মতো চিপে আবার ফিরিয়ে দেব।
সুজয় হা-হা-হা-হা করে ফেটে পড়ল। তার হাসিতে কেঁপে উঠল স্যাঁতস্যাঁতে গলির অন্ধকার চোদ্দ নম্বর কোঠাটি। ঠোঁট থেকে খসে পড়ল সিগারেট। স্ফুলিঙ্গগুলি লাফাচ্ছে মেজেতে । সুজয় হাসি থামাতেই পাড়ছে না।
সুজয় সিলিং থেকে চোখ নামিয়ে— রাতদুপুরে ফোন করে হঠাৎ এ কী আবদার, মিসেস সুরঞ্জনা? শ্রীমান বুঝি হাসপাতালে নাইট ডিউটিতে?
সুরঞ্জনা ফোনটা চেপে ধরে— হম্। নাইট ডিউটি। রোজই নাইট ডিউটি। এখন বলো, দেবে কি না ?
সুজয়— কী ?? কী চাই এবার? কী চাই ? ফুসফুস? কী হবে তাতে, শুনি!
সুরঞ্জনা— নিকোটিনগুলো গামছার মতো চিপে আবার ফিরিয়ে দেব।
সুজয় হা-হা-হা-হা করে ফেটে পড়ল। তার হাসিতে কেঁপে উঠল স্যাঁতস্যাঁতে গলির অন্ধকার চোদ্দ নম্বর কোঠাটি। ঠোঁট থেকে খসে পড়ল সিগারেট। স্ফুলিঙ্গগুলি লাফাচ্ছে মেজেতে । সুজয় হাসি থামাতেই পাড়ছে না।
সেই অট্টহাসিতে হাসি ছাড়া আর সবকিছুই ছিল।
অন্ধকার ঘরে তার চোখে বারবার ভেসে উঠছিল, দুই স্তনের ঠিক মাঝখানে সুরঞ্জনার
সেই কালো মিশমিশে তিলটি। নিজেকে সামলে নিয়ে সে প্রাক্তন প্রেমিকা মিসেস সুরঞ্জনার কাছে
পাল্টা আবদার করে বসল—
ফুসফুস ? ফুসফুস চাই? অবশ্যই দিতে পারি মিসেস সুরঞ্জনা দেবী । তবে তার আগে
আমার হৃৎপিণ্ডটা তুমি ফিরিয়ে দাও। অক্ষত অবস্থায়। পারবে? পারবে?? পারবে???
একটু সময় গোটা পৃথিবীটা যেন থমকে গিয়েছিল। সুরঞ্জনার চোখের জল ততক্ষণে নাকের পাশ দিয়ে
গড়িয়ে গড়িয়ে ঠোঁট অতিক্রম করে, গলা বেয়ে বেয়ে বুকের মাঝখানে ঠিক ওই তিল পর্যন্ত
পৌঁছে গিয়েছিল।
সম্বিত ফিরে পেয়ে সুরঞ্জনা শুধু বলল— হ্যাঁ বন্ধু, দেব। অবশ্যই
ফিরিয়ে দেব তোমার হৃদয়। শুধু আরো দুদিন সময় দাও আমায়। আমার সমস্ত রক্ত দিয়ে চুবিয়ে
রেখেছি তোমার হৃৎপিণ্ডটা ।
No comments:
Post a Comment